চলছে মল মাস। সাধারণত মহালয়ার ছয় দিন পরই হয় দেবী দুর্গার আগমন। তাই মহালয়ার পর থেকে দেবীর আগমনের ঘণ্টা বাজে। মহালয়া হয়ে থাকে শরৎকালে। কিন্তু এক মাসে দুটি অমাবস্যা পড়লে সেই মাসকে শাস্ত্রমতে ‘মল’ মাস বলা হয়। এর মানে হচ্ছে সেই মাস অশুভ। তাই এবার এক মাসে দুটি অমাবস্যা পড়ায় দেবী আসছেন হেমন্তে। শরতে মহালয়া শুরু হওয়ার ৩৫ দিন পর এবার আসবেন দেবী দুর্গা।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জানায়, এ বছর মহালয়া ১৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে। মহালয়ায় পিতৃপক্ষের সমাপ্তিতে দেবীপক্ষের সূচনা হলেও এবার আশ্বিন মাস ‘মল’ মাস হওয়ায় দেবীপক্ষে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত না হয়ে প্রায় এক মাস পাঁচ দিন অর্থাৎ ৩৫ দিন পর হেমন্তের কার্তিক মাসে ষষ্ঠী তিথিতে দেবীর আগমনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গা পূজা। ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ষষ্ঠী পূজা হবে আগামী ২২ অক্টোবর।
পঞ্জিকা অনুযায়ী, মহালয়ার মাসে দুটি অমাবস্যাই একই মাসে পড়েছে। আর সেজন্যই এবার পূজা এক মাস পিছিয়ে আশ্বিনের বদলে কার্তিকে হবে। শাস্ত্রমতে, ‘মল’ মাসে কোনও পূজা হয় না। শুধু পূজাই নয়, কোনও শুভ অনুষ্ঠানও ‘মল’ মাসে করা যায় না। তাই এ বছর মা দুর্গা আসছেন কার্তিক মাসে। পুরোহিতরা বলছেন, দুটি অমাবস্যা থাকায় বাংলা ১৪২৭ সালের আশ্বিন মাস মল মাস। তাই পূজা এবার শরতে নয়, হেমন্তে। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও একই কারণে মহালয়া ও দুর্গা পূজা শুরুর ব্যবধান প্রায় এক মাস হয়েছিল।
পুরোহিতদের মতে, প্রতি তিন বছর অন্তর একটি ‘অধিক-মাস’ আসে। সূর্য ও চন্দ্র মাসের গণনার ওপর ভিত্তি করে হিন্দু ক্যালেন্ডার চলে। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী একটি সূর্যবর্ষ ৩৬৫ দিন ও প্রায় ৬ ঘণ্টার হয়ে থাকে। আবার চন্দ্রবর্ষ ৩৫৪ দিনের হয়। এই দুইয়ের মধ্যে ১১ দিনের পার্থক্য থাকে। টানা তিন বছরে এটি এক মাসের সমান হয়ে যায়। এই অতিরিক্ত মাসের পার্থক্য দূর করার জন্যই প্রতি তিন বছরে একবার অতিরিক্ত মাস আসে। একেই অধিক-মাস বলা হয়। এ বছর আশ্বিন সেই অধিক-মাস।
All rights reserved © Use of website without any written permission illegal
Leave a Reply